চতুরাশ্রম
বৈদিক আর্যরা প্রথম থেকে আর্যদের কাছ থেকে নিজেদেরকে পৃথক রাখার জন্য আগ্রহী ছিল । তাই তাদের ধর্মীয় জীবনে নানা রীতিনীতির প্রচলন হয় । তাদের ধর্মীয় জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য ছিল চতুরাশ্রম প্রথা । আর্যদের প্রধান তিনটি বর্ণ অর্থাৎ ব্রাহ্মণ , ক্ষত্রিয় ও বৈশ্যদের জীবনধারা চারটি পৃথক পর্যায় বা আশ্রমে বিভক্ত ছিল । এগুলি একত্রে ‘ চতুরাশ্রম ’ নামে পরিচিত ।
চতুরাশ্রম পর্যায় : চতুরাশ্রমের চারটি আশ্রম হল – ( i ) ব্রহ্মচর্য , ( ii ) গার্হস্থ্য , ( iii ) বানপ্রস্থ ও ( iv ) সন্ন্যাস ।
( i ) ব্রহ্মচর্য : ব্রহ্মচর্য অর্থাৎ বাল্যকালে আর্যদের কর্তব্য ছিল গুরুগৃহে বিদ্যাচর্চা করা । তাঁদের গুরুগৃহে থেকে কঠোর জীবন যাপনের মধ্য দিয়ে শিক্ষালাভ করতে হত ।
( ii ) গার্হস্থ্য : এই পর্বে তাদের কর্তব্য ছিল বিবাহ করে সংসার ধর্ম পালন করা । এইসময় তাঁকে দেবঋণ , পিতৃঋণ ও ঋষিঋণ শোধ করতে হত ।
( iii ) ৰানপ্ৰস্থ : প্রৌঢ় বয়সে কর্তব্য ছিল সংসার ত্যাগ করে পরলোক চিন্তা এবং সংসার থেকে দূরে একাকী বাস করা ।
( iv ) সন্ন্যাস : এই জীবনে কর্তব্য ছিল ঈশ্বর চিন্তা ও সন্ন্যাসীদের জীবনযাপন করা । এই সময় বসতি থেকে দূরে পাহাড়ে বা বনে তাঁদের বাস করতে হত । তাঁদের খাবার ছিল বনের ফলমূল ।
সিদ্ধান্ত : আর্যদের প্রথম তিনটি বর্ণ অর্থাৎ ব্রাহ্মণ , ক্ষত্রিয় ও বৈশ্যদের এই চতুরাশ্রম প্রথা পালন বাধ্যতামূলক ছিল । শূদ্ররা ছিল আর্য সমাজের সবচেয়ে অবহেলিত শ্রেণী । চারটি আশ্রম পালনে কোন অধিকার তাদের ছিল না ।